সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৭ অপরাহ্ন
গাইড বই না কিনলে ব্যাবহারিক পরীক্ষায় মার্ক কম দেওয়ার হুমকি
আগৈলঝাড়া (বরিশাল) সংবাদদাতাঃ বছরের শুরুতেই উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতি বছরের মতো এ বছরও সরকার কর্তৃক বিনামূল্যে পাঠ্যবই সরবরাহ করলেও বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সরকার নিষিদ্ধ গাইড বই কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে উপজেলা সদরের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ ভেগাই হালদার পাবলিক একাডেমী’র এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
জানাগেছে, আগৈলঝাড়ায় ভেগাই হালদার পাবলিক একাডেমী’র গণিত বিষয়ের শিক্ষক রণজিৎ কুমার বাড়ৈ ওই বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স এর গাইড বই কেনার জন্য শিক্ষার্থীদের চাপ প্রয়োগ করে আসছেন। শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের সুনিদৃষ্ট ওই কোম্পানীর গাইড বই কেনার জন্য চাপ দিয়ে বলছেন যারা পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স এর গাইড বই কিনবে না তাদের ব্যাবহারিক পরীক্ষায় (প্রাটিক্যাল) মার্ক কম দেওয়ার হুমকিসহ সুনিদৃষ্ট ওই কোম্পানীর গাইড বই না নিয়ে ক্লাশে আসলে তাদেরকে সাড়া ক্লাশ দাঁড় করিয়ে রাখা হবে। আর গাইড কেনার কথা সাংবাদিকসহ অন্য কাউকে জানালে পরীক্ষায় মার্ক কম দেওয়ার ঘোষনা দেন শিক্ষক রণজিৎ কুমার বাড়ৈ। আর যে সমস্ত শিক্ষার্থীরা সুনিদৃষ্ট ওই কোম্পানীর গাইড বই কিনবে তাদেরকে স্পেশাল সাজেশন দেয়া হবে। এ কারণে বাধ্য হয়েই সরকার নিষিদ্ধ গাইড বই কিনতে হচ্ছে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের বলেন, রণজিৎ স্যার প্রতিদিনই পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স এর গাইড বই কেনার জন্য আমাদেরকে চাপ প্রয়োগ করে আসছেন। আমরা ওই গাইড বই না কিনলে আমাদের প্রাটিক্যাল মার্ক কম দেওয়ার কথাসহ গাইড বই ছাড়া বিদ্যালয়ে আসলে আমাদেরকে তার গণিত ক্লাশে সাড়ক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখা হবে। আর গাইড কেনার কথা কাউকে জানালে পরীক্ষায় মার্ক কম দেওয়ারও কথা বলেন তিনি। যারা পাঞ্জেরী গাইড বই কিনবে তাদেরকে ওই গাইড বই থেকে পরীক্ষায় আসা সম্ভাব্য প্রশ্নসহ স্পেশাল সাজেশন দেয়া হবে।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স এর গাইড বই কেনার কথা বলার সত্যতা স্বীকার করে শিক্ষক রণজিৎ কুমার বাড়ৈ মুঠোফোনে সাংবাদিকদের বলেন, আমি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের গাইড কেনার কথা বলেছি। তবে এই গাইডবই কেনার জন্য তাদের কোন রকম চাপ প্রয়োগ করা হয়নি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক যতীন্দ্র নাথ মিস্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের গাইড বই কেনার ব্যাপারে বিদ্যালয় থেকে কোন নির্দেশনা প্রদান করা হয়নি। বিদ্যালয়ে গাইড বই পড়ানো অবৈধ। সরকার শিক্ষার্থীদের মাঝে যে পাঠ্য বই বিতরণ করেছেন প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের সেই পাঠ্য বই পড়তে হবে। শিক্ষার্থীদের গাইড বই কিনতে বাধ্য করা হলে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে ভেগাই হালদার পাবলিক একাডেমী’র এ্যাডহক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস বলেন, শিক্ষার্থীদের গাইড বই কিনতে বাধ্য করার ঘটনাটি আমার জানা নেই। আমি উপজেলা নির্বাচনী কাজে পটুয়াখালী আবস্থান করছি। আমি আগৈলঝাড়ায় এসে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করব।